৫ টি প্লাগিন আপনার ওয়েবসাইটকে সুন্দর এবং নিরাপদ করে রাখতে যথেষ্ট হবে। আপনাদের সাথে আজকে ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটের সেরা ৫ টি প্লাগিন নিয়ে আলোচনা করব। আপনি জেনে অবাক হবেন যে, বর্তমান সময়ে পুরো বিশ্বে ৪৩% ওয়েবসাইট তৈরি হয়ে থাকে ওয়ার্ডপ্রেস সিএমএস ব্যবহার করার মাধ্যমে। সুতরাং বুঝতেই পারছেন ওয়ার্ডপ্রেস সিএমএস এ কত বেশি ওয়েবসাইট রয়েছে। ওয়ার্ডপ্রেস সিএমএস ব্যবহার করে খুব সহজে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা এবং কন্ট্রোল করা যায়। কিন্তু সেই ওয়েবসাইটটি যদি আপনার কাঙ্খিত ভিজিটরদের জন্য সুন্দরভাবে সাজানো না হয়, তাহলে আপনি খুব বেশি একটা ভিজিটর পাবেন না। ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটের গুরুত্বপূর্ণ দুইটা অংশ হলো থিম এবং প্লাগিন। আজকে টপ ৫ টি প্লাগিন নিয়ে আলোচনা করব যা আপনার ওয়েবসাইটের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ। তাহলে আর দেরি না করে চলুন দেখে নেয়া যাক আজকের সেরা ৫ টি ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন কি কি।
১। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও (SEO)
ধরুন আপনার একটি ওয়েবসাইট রয়েছে কিন্তু সেটি আপনি ব্যতীত কেউ জানে না। তাহলে কি কোন মানুষ আপনার ওয়েবসাইট খুঁজে পাবে কিংবা আপনার কনটেন্ট পড়তে পারবে? অবশ্যই পারবে না। আমরা জানি বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বড় সার্চ ইঞ্জিন হচ্ছে গুগল। তাই আপনাকে অবশ্যই আপনার ওয়েবসাইটটি গুগল সার্চ ইঞ্জিনে যুক্ত করতে হবে, যাতে করে মানুষ আপনার ওয়েবসাইটকে সহজে খুঁজে পায় এবং ভিজিট করতে পারে।
ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটকে গুগল সার্চ ইঞ্জিনে যুক্ত করার জন্য কিংবা আপনার ওয়েবসাইটের কনটেন্ট গুলাকে গুগলে ইনডেক্স করার জন্য সবচেয়ে সেরা যে প্লাগিন রয়েছে সেটি হলো – Yoast SEO। আপনি এই প্লাগিন এর মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইটকে গুগলে ইনডেক্স করতে পারবেন কিংবা আপনার পুরো ওয়েবসাইটকে গুগলে যুক্ত করতে পারবেন। এই প্লাগিনটি ছাড়াও আরো অন্যান্য অনেক প্লাগিন রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে আপনি আপনার ওয়েবসাইটকে এসইও করতে পারবেন। যেমন- Rank Math SEO, All In One SEO ইত্যাদি।
২। ওয়েবসাইট দ্রুত লোড করার জন্য
আমরা যখন কোন একটি ওয়েব পেজ ভিজিট করি তখন আমাদের ব্রাউজারে Cache জমা হয়ে থাকে। আমরা বিভিন্ন ওয়েবসাইট ভিজিট করার ফলে আমাদের ব্রাউজারে হিস্টরি জমা থাকে, Cache জমা থাকে। সেগুলো ডিলেট করার প্রয়োজন পড়ে অন্যথায় কোন একটি ওয়েবসাইটে যদি কোন ডাটা পরিবর্তন করা হয় তবে আমাদের ব্রাউজারে আগের ডাটা সেভ থাকার ফলে প্রায় সময় নতুন ডাটা লোড হয় না । একইভাবে ওয়েবসাইটে ভিজিটর ভিজিট করার কারণে আমাদের ওয়েব পেজগুলো একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ ডাটা কে Cache করে রাখে। যা ক্লিন করার মাধ্যমে ওয়েবসাইট কে দ্রুত লোড করা যায়।
আপনার ওয়েবসাইটকে দ্রুত লোড করার জন্য ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটের জন্য সবচেয়ে সুন্দর একটি প্লাগিন হচ্ছে LiteSpeed Cache । তাছাড়াও আরো অন্যান্য প্লাগিন রয়েছে যা আপনাকে ওয়েবসাইট দ্রুত লোড করার জন্য সহায়তা করে থাকবে। তবে মনে রাখবেন একসাথে একই ধরনের দুটি প্লাগিন ব্যবহার করবেন না তাহলে একটি প্লাগিন আরেকটি প্লাগিন এর সাথে কনফ্লিক্ট হবে। অন্যান্য আরো প্লাগিন হলো- Wp Optimize, WP Rocket, W3 Cache, Autoptimize, Wp Super Cache, FlyingPress ইত্যাদি।
৩। ওয়েবসাইটের সুরক্ষার জন্য
একটি ওয়েবসাইট তৈরির পরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি সেটি হচ্ছে হ্যাক হওয়া কিংবা ওয়েবসাইট নিরাপত্তা জনিত সংকটে থাকা। আপনি একটি ওয়েবসাইট তৈরি করলেন কিন্তু আপনার ওয়েবসাইটের কিছু দুর্বলতার কারণে ওয়েবসাইটটি হ্যাক হয়ে যেতে পারে। যাতে আপনার ওয়েবসাইট হ্যাক না হয় কিংবা আপনার ওয়েবসাইটে কোন হ্যাকার কোন ধরনের অ্যাটাক করতে না পারে তার জন্য ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটের গুরুত্বপূর্ণ একটি প্লাগিন হচ্ছে WP Security ( All In One Security)। তাছাড়াও অন্যান্য অনেক প্লাগিন রয়েছে যার মাধ্যমে আপনি আপনার ওয়েবসাইটকে হ্যাকিং কিংবা অ্যাটাকের হাত থেকে রক্ষা করতে পারবেন। যেমন- Solid Security (Former iTheme Security), Wordfence, Sucuri Security, MalCare ইত্যাদি।
WordPress Security এর জন্য সেরা ফ্রি ৫টি প্লাগিন |
৪। সোশ্যাল মিডিয়াতে ওয়েবসাইটে শেয়ার করার জন্য
ধরুন আপনার ওয়েবসাইটের একটি আর্টিকেল কিংবা কনটেন্ট আপনি সোশ্যাল মিডিয়াতে মানুষের সাথে শেয়ার করতে চাচ্ছেন। সে ক্ষেত্রে আমরা অনেকে যেটা করে থাকি- ওয়েবসাইট থেকে লিংক কপি করে সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করে থাকি কিন্তু সেখানে আমাদের লিংকটি সুন্দরভাবে দেখায় না। যার ফলে অনেকের কাছে বিরক্তির কারণ হয়ে থাকে। তাই আপনার ওয়েবসাইটের আর্টিকেলটি সোশ্যাল মিডিয়াতে সুন্দরভাবে উপস্থাপনার জন্য কিংবা সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি প্লাগিন হচ্ছে Shareaholic।
৫। স্পামার এর হাত থেকে ওয়েবসাইট সুরক্ষিত রাখার জন্য
ওয়েবসাইটে হ্যাকিং এর মত জঘন্যতম আরেকটি ব্যাপার হচ্ছে স্পাম। বিশেষ করে যখন কোন হ্যাকার আপনার ওয়েবসাইটকে হ্যাক করতে না পারে কিংবা আপনার ওয়েবসাইটের অ্যাক্সেস নিতে না পারে তখন তার মধ্যে কুবুদ্ধি জন্ম নেয় যে, কিভাবে আপনার ওয়েবসাইটেকে ডাউন করে দেওয়া যায়। তার জন্য স্পামাররা আপনার ওয়েবসাইটে অটোমেটিক বিভিন্ন পোস্ট তৈরি করবে কিংবা অসংখ্য কমেন্ট একসাথে আপনার বিভিন্ন আর্টিকেলে কমেন্ট করবে কিংবা আপনার একটি/দুইটি বা তার থেকে বেশি ওয়েব পেজে টার্গেট করে বট ভিজিটর প্রেরণ করে আপনার ওয়েবসাইট কে ডাউন করে দিতে পারে। এই ধরনের স্পার্ম অ্যাটাক থেকে রক্ষা পেতে গুরুত্বপূর্ণ একটি ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন হচ্ছে WordPress ReCaptcha Integration । আপনি এই স্পাম থেকে মুক্তি পেতে অন্যান্য প্লাগিনও ব্যবহার করতে পারেন। যেমন- Hide My WP, Wp Security, Wordfence ইত্যাদি।
প্রিয় পাঠক, উপরে উল্লেখিত ৫ টি প্লাগিন আপনার ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটের জন্য খুবই দরকারি। এই পাঁচটি প্লাগিন ব্যতীত আপনি আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী অন্য সকল প্লাগিন ব্যবহার করতে পারেন তবে মনে রাখবেন একটি ওয়েবসাইটকে সুন্দরভাবে সাজানোর জন্য, দ্রুত স্পিড অপটিমাইজেশন করার জন্য, ওয়েবসাইটের সুরক্ষার জন্য উপরোক্ত প্লাগিনগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ।
আজকের ব্লগটি এ পর্যন্ত। আবার দেখা হবে আগামী কোন নতুন একটি টিউটোরিয়ালে। সেই পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকুন, ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন। ধন্যবাদ।
এতদিন পর খুঁজে পেলাম। সেরা প্লাগিন সব।