অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

জনপ্রিয় আর্টিকেল

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি? অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে ইনকামের সেরা ৫ টি টিপস

আর্টিকেল এর সূচিপত্র

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি এবং কিভাবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করবেন জানতে হলে এই লেখাটি আপনার জন্য। আমরা এই আর্টিকেলে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে ইনকামের সেরা ৫ টি টিপস সম্পর্কে আলোচনা করব।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বলতে আমরা বুঝি যে, কোনো কোম্পানির পণ্য যদি আমরা বিক্রি করে দিতে পারি তার বিনিময়ে কোম্পানি আমাদের যে কমিশন বা টাকা দেয় তাই হচ্ছে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। এটি অন্যের পণ্য বা সেবা বিক্রির ব্যবস্থা করে কমিশন আয় করার পদ্ধতি ।

দেশ বিদেশের বিখ্যাত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের পণ্য বা সেবা বিক্রি বৃদ্ধির জন্য সাধারণ মানুষের সহায়তা নেওয়ার চেষ্টা করে। তারা প্রতিটি পণ্য বিক্রির জন্য নির্দিষ্ট কিছু পরিমাণ কমিশন দিয়ে থাকে। মূলত অনলাইন ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে এই সুবিধা থাকে। যেমন- দিপান্তর ডট কম বাংলাদেশের একটি বিখ্যাত বই বিক্রির ওয়েবসাইট। যদি আমি দিপান্তর এর অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামে যুক্ত থাকি। আর যদি আমি তাদের ১০০ টাকা দামের একটি বই বিক্রি করে দেই। তাহলে তারা তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা আমাকে কমিশন দেবে। এভাবে আমি যদি ১০০ টাকা দামের দশটা বই বিক্রি করতে পারি। তাহলে প্রতি বইয়ে ১০ টাকা অথবা ২০ টাকা করে আমি ১০০ থেকে ২০০ টাকা কমিশন পাব। এই যে তাদের পণ্য আমি বিক্রি করে দিচ্ছি এটাই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। এখানে মার্কেটিং বলতে আমি কমিশন লাভের আশায় তাদের পণ্যের প্রচার করে দিচ্ছি মার্কেটিং করে দিচ্ছি। এজন্য এটাকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বলা হয়। আমরা এই পোষ্টে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে ইনকামের সেরা ৫ টি টিপস  সম্পর্কে জানব।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর সেরা ৫ টি পদ্ধতিঃ- 

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর ওয়েবসাইটে যে ব্যক্তি মার্কেটিং করতে ইচ্ছুক তার নামে একটি একাউন্ট খুলতে হয়। উক্ত অ্যাকাউন্টে যেই পণ্যটি বিক্রি করতে ইচ্ছুক তার জন্য লিংক তৈরি করা যায়। এক্ষেত্রে প্রতি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটারের জন্য আলাদা আলাদা লিংক তৈরি হয়। একজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটারের কাজ হচ্ছে এই লিংকটি তার সোশ্যাল মিডিয়া বা ফেসবুক পোস্ট বা গ্রুপে শেয়ার করা। এরপর যখন কেউ উক্ত লিংক ব্যবহার করে পণ্যটি কিনবে তখন শেয়ারকারীর একাউন্টে কমিশনের টাকা জমা হবে। এভাবে এই মার্কেটিং কাজ করে। আশা করি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি আপনারা বুঝতে পেরেছেন।

তাহলে জানা গেল অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি । এবার আসুন আমরা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে ইনকামের সেরা ৫ টি টিপস জেনে নেই।

১.  কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে কাজ করুন:-

আপনার যদি সোশ্যাল মিডিয়াতে কোন পেইজ বা কোন গ্রুপ থেকে থাকে এবং সেখানে অনেক ফলোয়ার থাকে তাহলে আপনি সেখানে কাজ করতে পারেন। এটি হতে পারে, যে কোন সোশ্যাল মিডিয়া । যেমনঃ ব্লগ সাইট, ফেসবুক পেইজ, গ্রুপ, ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট, ইউটিউব চ্যানেল ইত্যাদি। তাহলে আপনি এই প্লাটফর্ম গুলো ইউজ করে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন। আপনি তো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি তা জানেন। আপনি আপনার সোশ্যাল মিডিয়াতে যে ধরনের পণ্য বিক্রি করতে চাচ্ছেন। সে বিষয়ে বিভিন্ন কনটেন্ট তৈরি করুন। উপকারিতা জানিয়ে মানুষকে  এটি কিনতে উদ্বুদ্ধ করুন।  কিংবা কোন বই বা গ্যাজেট হলে সেগুলোর রিভিউ দিয়ে ভিডিও তৈরি করুন।  অথবা এই  পণ্যগুলো মানুষ কেন কিনবে সে বিষয়ে ফুটিয়ে তুলুন।

প্যাসিভ ইনকাম কি? প্যাসিভ ইনকাম করার সেরা ৫ টি উপায়

এরপর রিভিউ কিংবা ভিডিওটির সাথে আপনার অ্যাফিলিয়েট লিংকটি যুক্ত করে দিন। অথবা কমেন্ট বা ডেস্ক্রিপশন বক্সে দিয়ে দিন। তাহলে তারা সহজেই পণ্যটি কিনবে এবং আপনি কমিশন পেতে থাকবেন। এটি হলো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে ইনকাম করার সেরা ৫টি টিপস এর মধ্যে অন্যতম। আপনার যদি সোশ্যাল মিডিয়াতে ফলোয়ার না থাকে তাহলে আপনি নতুন করে শুরু করতে পারেন তবে এক্ষেত্রে সফলতা পেতে বেশ সময় লাগবে।

২. নিজস্ব ওয়েবসাইট তৈরি করুনঃ-

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে ইনকামের সেরা ৫টি টিপস এর মধ্যে অন্যতম হলো নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকে সেল বৃদ্ধি করা। এখন খুব সহজেই অল্প দামে বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে ডোমেইন হোষ্টিং কেনা যায়। আপনি একটু ইন্টারনেটে ঘাটাঘাটি করলে নিজে থেকেই একটা ব্লগ সাইট দাঁড় করাতে পারবেন। ব্লগ সাইট বলতে আমি বোঝাচ্ছি যে ধরনের ওয়েবসাইটে আপনি বিভিন্ন লেখালেখি করে পোষ্ট করতে পারেন। অনেকটা সংবাদপত্রের ওয়েবসাইট গুলোর মত যেখানে মানুষ এসে আপনার লেখা গুলো পড়তে পারবে। এ ধরনের ওয়েবসাইট গুলোতে আপনি আপনার পছন্দের পণ্যের রিভিউ দিতে পারেন। সুবিধা-অসুবিধা উল্লেখ করে লেখালেখি করতে পারেন। মানুষকে এই পণ্যটি কেনার জন্য উদ্বুদ্ধ করতে পারেন। তারপর পোষ্টের নিচে বা সুবিধাজনক জায়গায় আপনার অ্যাফিলিয়েট লিংকটি দিয়ে দিতে পারেন। যেখানে ক্লিক করে মানুষ ওই পণ্যটি সহজেই কিনতে পারবে।

৩. বিভিন্ন রিভিউ গ্রুপের পোষ্টে কমেন্ট করুনঃ-

ফ্রিতে এবং ফলোয়ার জেনারেট করার মত ঝামেলা এড়িয়ে যদি কেউ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে চান। তার জন্য সবচেয়ে সুবিধা জনক উপায় হল আপনার প্রোডাক্ট রিলেটেড বিভিন্ন গ্রুপে যুক্ত হয়ে যাওয়া। প্রথমে আপনাকে আপনার পছন্দমত একটি পণ্য সিলেক্ট করতে হবে। তারপর সেই রিলেটেড অনেকগুলো গ্রুপে যুক্ত হয়ে যেতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি আপনার পছন্দ মত সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতে পারেন। যেহেতু বাংলাদেশ এ  ফেসবুক বেশি জনপ্রিয় তাই এক্ষেত্রে আপনি ফেসবুক ব্যবহার করতে পারেন। এরপর ওই গ্রুপে আপনি আপনার পছন্দের পণ্যের রিভিউ লিখে পোস্ট করুন।

৫ টি প্লাগিন যা ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটের জন্য অত্যাবশ্যকীয়

অথবা এই পণ্যের সুবিধা-অসুবিধা জানিয়ে পোস্ট করুন। পোস্টের শেষে এফিলিয়েট লিংক যুক্ত করে দিন। বিভিন্ন গ্রুপে লিংকসহ পোষ্ট করলে অটোমেটিক পোষ্ট ডিলিট করে দেয়। সেক্ষেত্রে আপনি পোষ্ট এর কমেন্টে লিংকগুলো শেয়ার করুন। পাশাপাশি পূর্ববর্তী সময় যদি কেউ আপনার পছন্দের পণ্যটি এর রিভিউ দিয়ে থাকে। সেই পোস্টের কমেন্টে গিয়ে এ ধরনের অ্যাফিলিয়েট লিংক শেয়ার করুন। এতে করে যখন কেউ পণ্যটি কিনবে তখন আপনি কমিশন  পেতে থাকবেন।

৪. কোল্ড ই-মেইলঃ- 

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে ইনকামের সেরা ৫ টি টিপস আমার কাছে জানতে চাইলে আমি অবশ্যই কোল্ড ই-মেইল এর কথা বলতাম। অবশ্যই ই-মেইল মার্কেটিং করেও অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করা যায় এবং বেশ ভালো রকম ইনকাম করতে পারা যায়। যদি ই-মেইল ভালো করে সিলেক্ট করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনাকে  প্রথমে বিভিন্ন ওয়েবসাইট বা সোশ্যাল মিডিয়া থেকে যারা আপনার পণ্য কিনতে পারে এমন লোকদের ই-মেইল কালেক্ট করতে হবে। এরপর আপনাকে সুন্দর করে কিছু বাছাই করা ই-মেইল লিখতে হবে। যে সকল ই-মেইলে আপনার পছন্দের পণ্যের গুণগান লেখা থাকবে। অথবা একজন ব্যক্তির কেন এই পণ্যটি কেনা উচিত সেই বিষয়ে বিস্তারিত লেখা থাকবে। তারপর ইমেইলের শেষে আপনার অ্যাফিলিয়েট লিংকটি দেওয়া থাকবে। এরপর আপনি তাদেরকে  সপ্তাহে একটি বা দুটি ইমেইল করবেন। তারা যদি সেই ই-মেইল থেকে পন্য কিনে তাহলে আপনি আর্নিং করতে পারবেন।

৫. পেইড মার্কেটিং করুন:- 

এবার আসি পেইড মার্কেটিং এর বিষয়ে। সহজ ভাষায় বলে রাখি, টাকা দিয়ে মার্কেটিং করাকে পেইড মার্কেটিং বলে। কিছু কিছু পণ্যের সিজন থাকে। যেমন, আপনি বছরের শুরুতে বইয়ের সেল বেশি পাবেন। কারণ নতুন বছরে শিক্ষার্থীদের নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হয়। সেক্ষেত্রে তারা নতুন বই খাতা কিনে। শীতকালে জ্যাকেট সোয়েটার এই ধরনের পণ্য বেশি বিক্রি হয়।  গরমকালে পাতলা টি শার্ট বা জার্সি এগুলো বিক্রি হয়।  রমজানে খেজুর বিক্রি হয়।  ঈদের সময় নতুন জামা-কাপড় বিক্রি হয়। তো আপনি এই ধরনের পিক সিজনগুলো বিভিন্ন পণ্যের জন্য খুঁজে বের করতে পারেন। এই সময় যেহেতু বেশি সেল হয়। সুতরাং এই সময় ক্রেতা বেশি থাকার কারণে আপনার রিভিউ বেশি আসতে পারে।  এক্ষেত্রে আপনি সোশ্যাল মিডিয়াতে পেইড মার্কেটিং করতে পারেন। টাকা দিয়ে আপনার পোষ্ট বুষ্ট করতে পারেন। এভাবে যখন আপনার দেওয়া লিঙ্ক থেকে অনেকে পণ্য কিনবে তখন আপনি রেভিনিউ বা কমিশন পাবেন।।

আশা করি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি? অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে ইনকামের সেরা ৫ টি টিপস সম্পর্কিত লেখাটি আপনাদের ভালো লেগেছে। আপনার মতামত জানাতে ভুলবেন না। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। আবার কোনো নতুন আর্টিকেলে কথা হবে। ধন্যবাদ।

আর্টিকেলটি ভালো লাগলে আপনার পরিচতদের সাথে শেয়ার করুন

Facebook
WhatsApp
Telegram
Twitter
Email
Print
Pathokbd Logo
সাবস্ক্রাইব
নোটিফিকেশন
guest
Ratting
4 মতামত সমূহ
মতামত
নতুন পুরাতন
Inline Feedbacks
সব কমেন্ট দেখুন
Study Home
Study Home
পাঠক
January 1, 2024 11:28 pm

সুন্দর ধারণা পেলাম , ধন্যবাদ।

আয়েশা খাতুন
আয়েশা খাতুন
অতিথি
January 2, 2024 7:17 am

৫ টি আইডিয়াই ভালো লাগছে।

Mamun
Mamun
অতিথি
January 3, 2024 2:39 am
Ratting :
     

Great

Rasel Mahmud
Rasel Mahmud
পাঠক
January 3, 2024 3:45 am
Ratting :
     

এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ইনকামের জন্য খুবই সুন্দর একটি পদ্ধতি।

Copyright © 2024 PathokBD.com